আসছে নতুন রাজনৈতিক দলঃ নেতৃত্বে ববি- মাওলা

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৫, ২০১৬ সময়ঃ ১০:৩৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:০৮ অপরাহ্ণ

কাজী লুৎফুল কবীরঃ

3-3

উন্নয়ন ও গঠনমূলক সুস্থধারার রাজনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে মাঠে আসছে আরেকটি নতুন রাজনৈতিক দল। যার মূল নের্তৃত্বে থাকছেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের বড় ছেলে, বিশিষ্ট শিক্ষানূরাগী, তরুণ রাজনীতিক ববি হাজ্জাজ। আর দলের কার্যনির্বাহী পরিচালনায় আছেন ত্রিপুরার একমাত্র স্বাধীন প্রথম মুসলিম নবাব শমসের গাজীর সপ্তম বংশধর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সদ্য জাপা ত্যাগী প্রবীণ রাজনীতিবিদ আবু তাহের মুহম্মদ গোলাম মাওলা চৌধুরী। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইসলামী মূল্যবোধ ও জনগণের গণতন্ত্রকে মূল প্রতিপাদ্য রেখে তৈরী করা হচ্ছে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় থাকা নতুন এই দলটির ঘোষনাপত্র এবং গঠনতন্ত্র।
‘স্বপ্নের ঢাকা’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে গত মেয়র নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষনা দেন জাতীয় পার্টির তখনকার আলোচিত তরুণ নেতা, এরশাদের বিশেষ উপদেষ্টা ববি হাজ্জাজ। হঠাৎ মাঝপথে সেই প্রচেষ্টা থেমে গেলেও, গুটিয়ে যায়নি তাঁর রাজনৈতিক ইচ্ছা ও তৎপরতা। খানিকটা ভিন্ন প্লাটফর্মে গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে থাকে স্বপ্নের ঢাকা থেকে স্বপ্নের দেশ। সেই সঙ্গে জাতীয় পার্টিতে দেখা দেয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। কখনও এরশাদ-রওশনের দ্বন্দ্ব। কখনও চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক নির্দেশনা না মানার সংস্কৃতি। আবার বহিস্কার-প্রত্যাহার বা কো চেয়ারম্যান অথবা সিনিয়র কো চেয়ারম্যান নিয়োগের অসুস্থ রাজনীতি হতাশ করে তোলে দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূল পযর্ন্ত। আর এতে করে অনেকে হয়ে পড়েন নিঃস্বক্রিয়। দলের অবস্থান পরিস্কার না করেই চলে রাজনৈতিক কর্মসূচী। সব মিলিয়ে শীর্ষনেতাদের মাঝে দেখা দেয় ক্ষোভ ও হতাশা। নিজ নিজ এলাকার জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দলের ব্যর্থতা দেখে অনেকে ইস্তফা দেন দলীয় কর্মকাণ্ডে। পদত্যাগ করেন দলের জনপ্রিয় শীর্ষ নেতা, বিশিষ্ট অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। যদিও পরবর্তীতে তার পদত্যাগপত্র কোন ঘোষনা ছাড়াই গ্রহন না করার কথা জানায় দলের একটি সূত্র। সর্বশেষ গেলো ৭ অক্টোবর পদত্যাগ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, টানা ১৬ বছর জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকা এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী।

এরপরই আলোচনায় আসে, কী করছেন জাপার দল ত্যাগী বা নিঃস্বক্রিয় দক্ষ ও অবহেলিত নেতারা। গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক অঙ্গনে চলে হিসেব-নিকেষ। কি হচ্ছে জাতীয় পার্টিতে,এ নিয়ে উঠে, আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এরই মাঝে পদত্যাগে শুভেচ্ছা জানিয়ে এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরীকে অভিনন্দন জানান সমাজের নানা স্তরের মানুষ। শুরু হয় শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়। দেখা-সাক্ষাত আর দল গঠনের পরামর্শও আসে বিভিন্ন অঙ্গন থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার এক শীর্ষনেতা এই প্রতিবেদকে জানান, দলের অনেকেই মাওলা চৌধুরীর সাহসী পদক্ষেপে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি দলের অনিয়মতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করলেও, ব্যক্তিগত পর্যায়ে কাউকে নিয়ে কটাক্ষ বা দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করেনি বলে সাদুবাদ জানায় পার্টির ঐ সূত্রটি। নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করছেন জাপার মধ্যম ও শীর্ষ বেশ কয়েকজন নেতা।

bobbyhajjaj_moulaসূত্র জানায়, তাদের অনেকে হয়তো নতুন রাজনৈতিক দলে আসতে পারেন। এছাড়া গেলো কদিন সহমত প্রকাশ করে এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত এবং টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, জাপা(জাফর) এর প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, এস এম আলম, সুপ্রীম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ড.সালাউদ্দিন আহমেদ, ঝিনাইদহের সাবেক এমপি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা নূর আহমেদ, সাবেক এমপি অধ্যাপিকা সবিতা বেগম, বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি শাহ শহীদ সরোয়ার, মুসলিম লীগের সাধারন সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, সিরাজগঞ্জের এমদাদুল হক এমদাদ, নাগরিক ভাবনার আহবায়ক রোটারিয়ান হাবিবুর রহমান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, আনোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইলের সাবেক জাসদ নেতা আজমল হোসেন, রাজশাহীর বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান, জাগো বাঙালীর আহবায়ক মেজর অবসরপ্রাপ্ত ডাঃ শেখ হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রামের সাবেক এমপি ও চাকসু জিএস মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণের জাপা নেতা আব্দুস সাত্তার রনি, উত্তর জেলার সৈয়দ আহমদ নূর, টেকনাফ জাপার হেলাল উদ্দিন হেলাল, নোয়াখালী জেলা জাপার সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী মঞ্জু, জাফর জাপার রওশন আলম গুলজার, কুড়িগ্রামের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ কুদুস আলী, ইসলামিক পার্টির সাধারন সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, বিএলডিপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ কবীর হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাজিব শেখ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফাউন্ডেশনের মহাসচিব তাফাকুল নবী জৌলুস, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের মো নুরু উর নবী পাটোয়ারী, সোনার বাংলা পার্টির সাধারন সম্পাদক সৈয়দ হারুন অর রশীদ, মানবাধিকার পার্টির চেয়ারম্যান আফরোজা বেগম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পার্টির সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সরকার, জাতীয় আইনজীবী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব শাহ মুহ্ম্মদ খসরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা জাফর উল্লাহ আজাদ, আজিজুল হক বাবুল ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান এ আর এম জাফর উল্লাহ চৌধুরী। এদিকে দেশের বাইরে থেকেও বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে উৎসাহীরা। আরব-আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীন থেকে প্রবাসীদের অনেকে ফেসবুক, মেইল, মোবাইল ফোন ও চিঠিপত্র পাঠিয়ে শুভেচ্ছা ও নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

এদিকে পদত্যাগের পর থেকে গেলো দু সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় দল গঠনের যৌক্তিকতা, উদ্দেশ্য, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান, জনগণের জন্য কি দিক-নির্দেশনা থাকা উচিত, আগাম বা আগামী নির্বাচনে দলের ভূমিকা কি হবে, জোটগত নির্বাচন হলে কি করতে হবে, সেসব বিষয় আলাপ-আলোচনা করেছেন ববি হাজ্জাজ ও মাওলা চৌধুরী।

এই দুই নেতার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এসব মিটিংয়ে জাপা ও অন্য বেশকটি দলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতাও অংশ নিয়েছেন। করেছেন মতবিনিময়। কথা বলেছেন দল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে। গেলো বুধবার ১৯ই অক্টোবর বিকেলে পল্টনে এক ব্যবসায়ীক রাজনীতিবিদের অফিসে সবশেষ এমন একটি মিটিংয়ে অংশ নেন নতুন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ও মহাসচিব এ টি এম মাওলা চৌধুরীসহ আরো অনেকে। টানা দু ঘন্টার এই বৈঠকে আলোচিত হয় দলের সম্ভাব্য নাম, গঠনতন্ত্র, ঘোষনাপত্র ও দলের প্রতীক নিয়ে। এছাড়া দলে কারা কারা আসবেন সে বিষয়ও কথা হয় উপস্থিত নানামতের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে। আলোচনায় আসে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় কোথায় হবে, কিভাবে গঠন করা হবে জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় কমিটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নেতার ঘনিষ্ট বেশকটি সূত্র জানায়, কমপক্ষে ৬০ থেকে ৬৫ টি আসনের র্টাগেট নিয়ে মাঠে নামছেন ববি-মাওলা। প্রস্তুতিও খানিকটা তেমন। সব বুঝে-শুনে, কিছুটা সময় নিয়ে ঝাচাই-বাছাইয়ের পর দল আত্মপ্রকাশের চিন্তা-ভাবনা তাঁদের। দেশব্যাপী সাংগঠনিক শক্তি তৈরীর পরই দলের নাম ঘোষনা করবেন ধনকুবের প্রিন্স মুসার ছেলে ববি হাজ্জাজ। আর এ জন্য হাতেও নেয়া হয়েছে বেশকিছু কর্ম-পরিকল্পনা। ধরা হয়েছে বড় ধরনের বাজেটও। দলের সম্ভাব্য মহাসচিব খুব শিগগিরই জেলায় জেলায় সফর করবেন অনুসারীদের নিয়ে। কথা বলবেন নানাস্তরের মানুষের সঙ্গে। মতামত নেবেন ছাত্র-শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক-কলামিষ্ট, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষের। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় সম্ভাব্য কমিটিও ঠিক করবেন ঐ সফর থেকে। আর প্রস্তুতি হিসেবে কিছুদিনের মধ্যেই প্রথম সফরে যাচ্ছেন নিজ জেলা ফেনীতে। বড় ধরনের একটি টিম নিয়ে সফর করবেন বলে দাবি করে তাঁর ঘনিষ্ট একট সূত্র। প্রত্যেকটি সফরের কর্মসূচীতে ব্যবহার করা হবে সর্বাধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি।

এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী কৌশলী উত্তরে বলেন, মনে রাখতে হবে আমি একজন রাজনীতিবিদ। আগাগোড়া রাজনীতি আর জনগণের গণতন্ত্র ছিলো আমার রাজনৈতিক দর্শন। ৪৫ বছর আগে এই ভাবনা থেকেই রাজনীতিতে পা দেই। কিন্তু মেঘে মেঘে অনেক বেলায়ও সেই পথে সঠিক পন্থায় হাঁটতে হয়তো কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তারপরও রাজনীতি ও গণতন্ত্রই হলো মানুষের একমাত্র আশারস্থল। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা যেতে চাই মানুষের আরো কাছাকাছি। যেখানে রাজনীতি ও প্রতিশ্রুতির প্রতি থাকে জনগণের আস্থা। তিনি বলেন, হোক না তা, ছোট আকারে অথবা ছোট ছোট কদমে এগিয়ে চলার প্রচেষ্টা। তারপরও অসুস্থ ক্ষমতার রাজনীতি তো, আর আমাদের রাজনৈতিক আর্দশকে গিলে খাবে না?

বিরোধী দলের সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও কেন জাপা ছাড়লেন, জানতে চাইলে মাওলা চৌধুরীর জানান, ৮ম কাউন্সিলের মধ্যদিয়ে জাতীয় পার্টি কিছুটা হলেও জনগণের কাতারে এসে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করবে এবং দলে গণতন্ত্র চর্চ্চা ফিরে আসবে, নেতাকর্মীদের এমন আশা অল্পদিনেই গুড়িয়ে যায়। ফের সুবিধাবাদী একটি চক্র আরো শক্ত অবস্থান নেয় এরশাদের আশপাশে। কাউন্সিলের পর তাদের ইশারা-ইঙ্গিতে চলে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। কমিটি গঠনে দেখা দেয় অনিয়ম ও জেষ্ঠ্যতা লংঘ্ননের ঘটনা।

তিনি বলেন, অভিযোগ আছে, বড় অংকের লেনদেনের বিনিময় নাম না জানা, সাংগঠনিক ভিত্তিহীন, অখ্যাত কিছু ব্যক্তিকে স্থান করে দেয়া হয় কেন্দ্রীয় কমিটিতে। জেষ্ঠ্যতা লংঘ্নন করে বহু প্রবীণ ও দক্ষ নেতাকে ডিঙ্গিয়ে তাদের দেয়া পদ-পদবী। আর এতে করে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয় দলের শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতাদের মাঝে। ঠিক তেমনি অভিযোগ এনে গত ৭ই অক্টোবর জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে পদত্যাগ পত্র তুলে দেন ভাইস চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী।

তিনি বলেন, বার বার এরশাদ জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের সঠিক ভূমিকায় আসতে নির্দেশনা দিলেও নীতি-নির্ধারকরা কেউই কর্ণপাত করেননি সে বিষয়। ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্য হয়ে জাপার মন্ত্রীরা, অপজিশনে বসে বিরোধী সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দিতে এতটুকু লজ্জা বোধ করেন না, যা দেখে অজপাড়া গাঁয়ের চায়ের কাপে চুমুকে আলোচকরাও মুখ লুকিয়ে হাসেন। ফেনীর কৃতি সন্তান, ভারতীয় আগ্রাসন থেকে ফেনী নদীর পানি রক্ষা আন্দোলনের জনক এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী হেসে বলেন, অনেকে জানতে চান, জাপা বিরোধী দল নাকি সরকারী দল, না বেসরকারী দল, কোনটি?
আর নতুন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, স্বপ্নের দেশ এর আহবায়ক, তরুন রাজনীতিক ববি হাজ্জাজ এই প্রতিবেদকে জানান, জনগণের কল্যাণে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সুস্থধারার রাজনীতি করতে চাই আমরা। ব্যক্তিগত জীবনে আমি বিশ্বাস করি, মানুষের জন্য কিছু করতে চাইলে,তা যে কোন পন্থায় করা সম্ভব। তবে, রাজনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে হলে,তার সুফল গণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণের একেবারে দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়া সহজ। ববি বলেন, মনে রাখতে হবে আমরা কোন দল ভাঙ্গার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। রাজনীতিতে যখন জড়িয়েছি, তখন তো জনগণের কাছে একটা প্রতিশ্রুতি তৈরী হয়েছে, যা রক্ষা করা নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রাজনীতির নামে মানুষের সঙ্গে আর কত প্রতারনা চলবে? কাউ না কাউকে তো ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও অসুস্থ রাজনৈতিক চর্চ্চা থেকে জনগণকে বের করে আনতে হবে। সুস্থধারার রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের সঙ্গে নিয়ে দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের সঠিক স্বাদ পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস করেন,তরুন প্রজন্মের সুস্থচিন্তার ধারক ববি হাজ্জাজ।

ববি হাজ্জাজের সংক্ষিপ্ত জীবনী:

ববি হাজ্জাজ। আগামীদিনের সম্ভাবনাময় তরুন রাজনীতিক। দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী প্রিন্স মুসা বিন শমসের এর বড় ছেলে তিনি। স্বাধীনতার পর জন্ম নেয়া ববি বেড়ে ওঠেন রাজধানী ঢাকায়। পড়াশোনা করেন দেশের স্বনামধন্য ইংরেজী মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যাপেল লীফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। সাফল্যের সঙ্গে ও লেভেল এবং এ লেভেল শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যান দেশের বাইরে। উচ্চতর বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করেন বিশ্বের নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। রাজনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী নেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে। আর বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্বাবিদ্যালয় হতে এমবিএ ডিগ্রী অর্জনের পর স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষনা করেন একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে। স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনার সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রকাশনায় লেখালেখির পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় নির্বাচনী ক্যাস্পেইনগুলোর সঙ্গে। বলতে গেলে ববির রাজনীতির শুরু অনেকটা সেখান থেকেই।
নব্বই দশকের প্রায় পুরোটা সময় এবং ২০০০ সালের পর, ব্যবসা উন্নয়ন ও আর্থিক বিষয়ক পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন ববি হাজ্জাজ। পাশাপাশি স্বক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে নিয়মিত কলাম লিখেন দেশের বহুল প্রচারিত ইংরেজী দৈনিক, দি ডেইলি স্টার ও দি ডেইলি ইন্ডিপেনডেন্ট এ। ২০০৯ সাল থেকে স্থায়ীভাবে দেশে বসবাস শুরু করেন তিনি। তখন থেকে অদ্যবধি তিনি শিক্ষকতা করছেন দেশের আরেকটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষকতার পাশাপাশি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কৌশল বিষয়ক গবেষক হিসেবেও কাজ করেছেন ববি হাজ্জাজ।
২০১২ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আহবানে মাঠের রাজনীতিতে আসেন ববি। দেয়া হয় জাপা চেয়ারম্যানের বিশেষ উপদেষ্টার দায়িত্ব। কিন্তু ঢাল নেই,তলোয়ার নেই,যেন নিধিরাম সর্দার। অনেকটা তেমনি অবস্থায় দক্ষতা ও যোগ্যতার সঙ্গে প্রতিকুল পরিবেশে নিজের উপর থাকা দায়িত্ব পালন করেন তরুণ রাজনৈতিক বিশ্লেষক ববি হাজ্জাজ। পাশাপাশি প্রায় এক বছর দলের উন্নয়নে কাজ করেন গবেষনা ও কৌশল উইং এর প্রধান হিসেবে। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে করা হয় জাপার মূখপাত্র ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী। এ সময় তিনি এবং তাঁর গবেষনা ও কৌশল উইং এর মাধ্যমে সারাদেশে ৩শ আসনে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। দলের জন্য ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেই বের করে আনা হয় নতুন অনেক প্রার্থী। যদিও পরবর্তীতে তার কোনটাই কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি,দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায়। তবে অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের পক্ষে তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকা ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের কাছে খ্যাতি অর্জন করেন তরুন রাজনীতিক ববি হাজ্জাজ।
২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দেয়ার পর থেকে জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাজনৈতিক সব ধরনের দায়-দায়িত্ব ও সম্পর্ক ছিন্ন হয় তাঁর। পরবর্তীতে আবারো তাঁকে এরশাদের বিশেষ উপদেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফিরে যাননি দলে। পরে ২০১৫ সালের অক্টোবরে স্বপ্নের ঢাকাকে স্বপ্নের দেশ এ রূপান্তর করে দেশব্যাপী নাগরিক ক্ষমতায়ন আন্দোলন শুরু করেন ববি হাজ্জাজ।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্বনেতাদের অনেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে তরুন এই রাজনীতিকের। যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান, যুক্তরাজ্যের পার্লমেন্ট মেম্বার, মিনিষ্টার, ইউ নেতা এবং ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনেক নীতি নির্ধারকের সঙ্গে রয়েছে তাঁর গভীর সম্পর্ক।
দুই কন্যা সন্তানের জনক ববি হাজ্জাজের স্ত্রী রাশনা ইমাম পেশাগত জীবনে একজন ব্যারিষ্টার। ববির ছোট ভাই জুবি বিন মুসাও একজন ব্যারিষ্টার। জুবি বিয়ে করেছেন ফেনীর কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বৈশাখী টেলিভিশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী শহিদুল্লাহর মেয়েকে। জুবি দীর্ঘদিন থেকে সুপ্রীমকোর্টে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (আইনমন্ত্রী) এর সহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। আর ছোট বোন ন্যান্সী জাহরা বিনতে মুসা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এ্যাস্টেট বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বড় ছেলে শেখ ফজলে ফাহিমের সঙ্গে সংসার করছেন ববি হাজ্জাজের আদরের ছোট বোন ন্যান্সী।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G